মিয়ানমারের বর্বর নির্যাতনের প্রতিবাদ ॥ রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব বালাগঞ্জ, নীরব ওসমানীনগর

22

ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা, গণধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভে বালাগঞ্জ উপজেলার ইসলামিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো সরব থাকলেও সে ক্ষেত্রে অনেকটা নিরব দেখা যাচ্ছে ওসমানীনগরের ইসলামিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে। গত এক সপ্তাহ থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বালাগঞ্জে নানা কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেলেও এবার ওসমানীনগরে কোনো কর্মসূচি চোখে পড়ছে না। অন্যান্য ইসলামিক ইস্যুতে খেলাফত মজলিস ওসমানীনগর উপজেলা শাখাসহ অন্যান্য ইসলামিক সংগঠন ও অনান্য সামাজিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা অনেকটাই নিরব থাকতে দেখা যাচ্ছে। যদিও এ এলাকায় কওমী মাদরাসাসহ ইসলামিক সংগঠন ও হেফাজতধারীদের সংখ্যা বেশি। গত সপ্তাহ খানেক পূর্বে উপজেলার গোয়ালাবাজারে জনা কয়েক ব্যক্তির উপস্থিতে সর্বস্তরের মুসলামানদের ব্যানারে নাম মাত্র এক কর্মর্সূচি পালন করা হলেও উপজেলার আরও কোথাও দৃশ্যত সক্রিয় কোনো কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুক্রবার বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি পালনের নির্দেশ থাকলেও বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির বিষয়ে দুই উপজেলার বিএনপির সিনিয়র নেতারা জ্ঞাত নয় বলেও তারা জানিয়েছেন। তবে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস টি এম ফখর উদ্দিন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওসমানীনগরে দলীয় ভাবে কোন কর্মসূচি  পালনের খবর আমার জানা নেই। উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে কোথাও কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকলে আমি খোঁজ নিয়ে জানাবে দেখবো। ওসমানীনগরে ইসলামিক সংগঠনগুলো নিরব থাকায় সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে অনেকাটা দ্বিাধাবোধ করছেন বলে অনেকইে জানান। এদিকে বালাগঞ্জে প্রতিবাদী কর্মসূচিগুলোতে নিরীহ রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, ধর্ষণসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল বয়সী মানুষের ওপর বর্বর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জাননো হয়। মিয়ানমার সরকারের এসব অমানবিক জুলুম, নির্যাতন বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জাতিসংঘসহ মুসলিম বিশ্বেেক অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।  পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং নিরাপত্তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আরো আন্তরিক হতে হবে। অবিলম্বে মায়ানমারে গণহত্যা ও নির্যাতন বন্ধে জাতিসংঘ ও মুসলিম বিশ্ব সহ সকল মানবতাবাদীকে সক্রিয়ভাবে উদ্যেগ গ্রহণসহ নিরীহ-নিরস্ত্র নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর বর্বরোচিত হামলা বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। সীমান্ত খুলে দিয়ে অসহায় মজলুম রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় গ্রহণের ব্যবস্থা সহ তাদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের ও সহযোগিতার জন্য জন্য বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি তাদের সাহায্যার্থে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহবান জানানো হয়। শুক্রবার বিকেলে বালাগঞ্জ উপজেলা খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে বালাগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ  মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় বাস স্ট্যান্ডে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করেন, সংগঠনের জেলা শাখার অফিস ও প্রচার সম্পাদক মাও: আশিকুর রহমান, উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মাও: হুসাইন আহমদ মিসবাহ, উপজেলা শাখার সভাপতি মাওঃ হুসাইন আহমদ আওলাদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম অফিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন মিসলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক কবি মীম হুসাই, বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়ন সভাপতি মাও: জয়নাল আবেদীন ও গিয়াস উদ্দিন নোমান। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বোয়ালজুড় বাজারে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। মাওলানা: শফিকুল ইসলাম জিহাদির সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন, শাহ্ আব্দুল হামিদ, মাওলানা: লোকমান খান, সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার আলী লেচু মিয়া, হাফিজ আব্দুস সালাম, ব্যবসায়ী সালমান আহমদ, সায়েম আহমদ, মাওলানা: জুয়েল আহমেদ লতিফি, মিজানুর রহমান খালিছাদার, ফরহাদ জায়গীরদার, মুহিবুর রহমান মুহিব, সাইদুর রহমান তুরণ, হাজী আব্দুর রহমান, আব্দুল বাসিত খালিছাদার, আব্দুল কাইয়ুম, রুয়েল আহমদ, সুজিবুর রহমান সুজিব, চনু মিয়া, রফিক আহমদ, রিপন জায়গীরদার প্রমুখ। এদিকে বুধবার বিকেলে  উপজেলার মোরারবাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘তাওহিদী জনতা’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় শত-শত মানুষ অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী পথসভায় সভাপতিত্ব করেন শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুস শহিদ।