বাংলাদেশের দারুণ প্রত্যাবর্তন

31

স্পোর্টস ডেস্ক :
চট্টগ্রাম টেস্টে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। দিন শেষে বেশ স্বস্তি নিয়েই সাজঘরে ফিরেছে বাংলাদেশের 249603_176খেলোয়াড়রা। বুধবার তৃতীয় দিনশেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৯ উইকেটে ৩৭৭ রান। তারা এখন বাংলাদেশের চেয়ে ৭২ রানে এগিয়ে রয়েছে। এই ব্যবধান খুব কম না হলেও অস্ট্রেলিয়া যেভাবে এগুচ্ছিল, তাতে আরো বড় লিড হতেই পারত। মেহেদী হাসান মিরাজ এবং মোস্তাফিজুর রহমান ৩টি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন।
আজ বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে দুই বিপজ্জনক ব্যক্তি হ্যান্ডসকম্ব এবং ওয়ার্নার দুজনকেই বিদায় করে খেলায় ফিরে আসার প্রয়াস চালায় বাংলাদেশ। হ্যান্ডসকম্ব রান আউট হয়েছিলেন ৮২ রান করে। আর ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজ। এটা ছিল ইনিংসে তার দ্বিতীয় উইকেটে। ওয়ার্নারের ক্যাচটি নেন ইমরুল কায়েস।
বৃষ্টির কারণে গতকালের খেলা দেরিতে শুরু হয়।
চট্টগ্রামের আকাশে সকাল আটটার দিকেও সূর্যের দেখা মিললেও বেলা যত গড়িয়েছে, আকাশের রং তত বদলেছে। পৌনে ১০টার দিকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। ভারী বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হতে দেরি হয়। থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত ছিল অনেকক্ষণ । এরই মাঝে শেষ হয় লাঞ্চ পর্ব।
চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ তিন দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। সে অনুযায়ীই শুরু হয় বৃষ্টি।
সকাল পৌনে নয়টায় মাঠে আসা বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা বৃষ্টি শুরুর আগ মুহূর্তেও অনুশীলন করছিলেন। তবে বৃষ্টি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চলে যান ড্রেসিং রুমে।
সকাল ১১টার দিকে বৃষ্টি থেমে যায়। কিন্তু ১২টার কিছু আগে আবার নামে বৃষ্টি। ১৫-২০ মিনিট পর তা থামলেও ভেজা মাঠের কারণে তখন শুরু করা যায়নি ম্যাচটি।
চট্টগ্রাম টেস্টে ভালো অবস্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া। ২ উইকেটে ২২৫ রান করা অস্ট্রেলিয়া এগোচ্ছে বড় স্কোরের দিকে। ওয়ার্নার-হ্যান্ডসকম্ব যেভাবে খেলছেন, তাতে টেস্ট বাঁচানো বেশ কঠিন বাংলাদেশের জন্য।
টানা সেঞ্চুরিতে রেকর্ড বইয়ে ওয়ার্নার : ঢাকার পর বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টেও সেঞ্চুরি করলেন অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ফলে অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে এশিয়ার মাটিতে টেস্টেও দু’ইনিংসে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে রেকর্ডবইয়ে নাম তুললেন ওয়ার্নার। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এমন নজির গড়েছিলেন বব সিম্পসন, অ্যালন বর্ডার, ড্যামিয়েন মার্টিন, মাইক হাসি ও মাইকেল ক্লার্ক। এরা প্রত্যকেই এশিয়ার মাটিতে টানা দু’ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়ার্নার। তৃতীয় দিন বৃষ্টির কারণে প্রায় তিন ঘন্টা পর খেলা শুরু হলে ক্যারিয়ারের ২০তম সেঞ্চুরি তুলে নেন ওয়ার্নার। তিন অংকে পা দেয়ার পর বাংলাদেশের কাটার মাস্টার পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হয়ে ১২৩ রানে থেমে যান তিনি। তার ২৩৪ বলের ইনিংসে ৭টি চার ছিল।
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৩৫ বল মোকাবেলা করে ১১২ রান করেছিলেন ওয়ার্নার। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি সত্বেও ঢাকা টেস্ট ২০ রানে হেরেছিলো অস্ট্রেলিয়া। ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।
এশিয়ার মাটিতে সবচেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করলেন ওয়ার্নার : বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ২৩৪ বল মোকাবেলা করে ১২৩ রান করেছেন ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। এই ইনিংস দিয়ে নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এশিয়ার মাটিতে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বল খেলার নজির স্থাপন করলেন ওয়ার্নার।
চট্টগ্রাম টেস্টের আগে এশিয়ার মাটিতে ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বল ওয়ার্নার খেলেছিলেন ১৭৪টি। ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর দুবাই টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭৪ বলে ১৩৩ রান করেছিলেন ওয়ার্নার।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০৫ রান।
দ্বিতীয় দিন : চট্টগ্রামের আবহাওয়ার সাথে উইকেটেরও বড্ড মিল! টেস্ট শুরুর আগের দিনও নিশ্চিত ছিলেন না অনেকে, ম্যাচ আদৌ ঠিকমতো হবে কি না। তুমুল বৃষ্টিপাত, ঘনকালো মেঘ সবই ছিল। কিন্তু ম্যাচের দিন সকালে হেসে ওঠে রোদ। কাল বিকেলের এক সময় অস্ট্রেলিয়া দলের দুই ব্যাটসম্যান হ্যান্ডসকম্ব ও ডেভিড ওয়ার্নার প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মাঠে সেবাশুশ্রুষা করে তাদের আবার খেলায় ফিরিয়ে আনে অসি টিমের ফিজিও। প্রচণ্ড রোদ ও গরমে বাজে অবস্থা তাদের।
অন্যদিকে গরমে কাবু না হলেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের রানের তোড়ে কাবু হয়ে গেছে টিম বাংলাদেশ। রানের পর রান। ৬৪ ওভারে সংগ্রহ করে ফেলেছেন তারা ২২৫ রান দুই উইকেট হারিয়ে। অথচ যেখানে অতি কষ্টে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে ৩০৫ রান ১১৩.২ ওভারে। এতটা দ্রুত রান তোলার গতিচিত্র অবাক করার মতো। কোনো ধরনের উইকেট প্রত্যাশা করে টস জিতে প্রথম ব্যাটিং করল বাংলাদেশ। এখন উইকেট স্পিনারদের উড়িয়ে ব্যাটসম্যানদেরই সহায়তা দিচ্ছে।
বলা যায়, একেবারেই ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠেছে জহুর আহমেদের উইকেট। আগের ইনিংসে স্পিনার নাথান লিয়ন যেভাবে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন। নিয়েছেন বাংলাদেশের ৭ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসে তার লেশমাত্রও ছিল না। স্থানীয় তিন স্পিনার সাকিব, তাইজুল ও মেহেদি হাসান আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। শুধু তাইজুল স্মিথের উইকেটটি নিয়ে কিছুটা সফল। তবুও বোলিংটা একেবারে মন্দ হয়েছে তা নয়। অসিরা বরাবরই অ্যাটাকিং ব্যাটিং করেন। বিশেষ করে ওয়ার্নার তো অ্যাটাকিংয়ের মাস্টার। কিন্তু তার ইনিংসের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে কতটা ধৈর্যের সাথে ব্যাটিং করে গেছেন। ৯৮ বলে দুইটি বাউন্ডারির সাথে হাফ সেঞ্চুরি করেন। যেখানে হ্যান্ডসকম্ব অবশ্য আরেকটু ফাস্ট ছিলেন। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন ৭৪ বলে। দিন শেষে দুই ব্যাটসম্যান অপরাজিত যথাক্রমে ৮৮ ও ৬৯ রানে। বলার আর অপেক্ষা রাখে না, দুইজনই ছুটছেন সেঞ্চুরির পানে। হাফ সেঞ্চুরি আরো একজন করেছেন। তিনি অসি ক্যাপ্টেন স্মিথ। ৫৮ করে তাইজুলের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। অবশ্য বাংলাদেশ দলের অন্যতম সদস্য নাসির হোসেন জানালেন এতে উদ্বিগ্ন নন তারা। একটা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে ঘণ্টা খানিকই যথেষ্ট। দ্বিতীয় দিনে ওই সময়ের অপেক্ষায় থাকবে টিম বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান এ ম্যাচেও দারুণ খেলছেন। মিরপুরে হারলেও তার বোলিং দারুণ হয়েছিল। চট্টগ্রামেও সে একই অবস্থা। প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন তিনি সাত উইকেট। আগের দিনের পাঁচ উইকেট নিয়ে খেলতে নেমে কাল নেন তিনি মুশফিক ও তাইজুলের উইকেট। তার বোলিং বিশ্লেষণ ৩৬.২-৭-৯৪-৭। তবে উইকেটের যে ধরন পরিলক্ষিত হয়েছিল সকালে। তা দ্রুত অনুধাবন করলে মুশফিক ও নাসিরদের আরেকটু ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করলে স্কোরটা ৩০৫ নয়, চার শ’তে গিয়ে ঠেকতে পারত। আর তা-ই ছিল পারফেক্ট। বাংলাদেশের ইনিংস শেষে মনে হচ্ছিল শ’খানেক রান কম হয়ে গেছে। সকালে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম ও নাসির হোসেন খেলতে নেমে মুশফিক বোল্ড হয়ে যান নাথানের বলে। ৬৮ রান করে আউট তিনি দ্বিতীয় দিনে ১২ রান যোগ করেন।
এরপর নাসিরের সাথে ভালোই খেলছিলেন মিরাজ। কিন্তু অ্যাগারের বলে এবার আউট নাসির। ২৯৩ রানে ওই আউট হন নাসির। এটাই বড় ক্ষতির কারণ হয়ে যায়। কেননা ততক্ষণে দ্বিতীয় দিনেও উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিলেন নাসির। এরপর মিরাজ দুই রান নিতে গিয়ে ওয়ার্নারের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হলে ৩০০ করাই টাফ হয়ে গিয়েছিল। তাইজুল একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ওই মার্কে পৌঁছলেও এরপর আউট হয়ে যান তিনিও। ফলে ইনিংস শেষ হয় বাংলাদেশের লাঞ্চের ৩০ মিনিট আগে। লাঞ্চের আগে খেলতে নেমে মুস্তাফিজের বলে আউট হন ওপেনার রেনশো। দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেন মুশফিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে। এরপর ওয়ার্নার ও স্মিথ মিলে খেলেন ৯৩ রানের মূল্যবান ইনিংস। ব্যাট হাতে এ দুই ব্যাটসম্যানকে দেখে কখনো মনে হয়নি তারা চাপের মধ্যে ব্যাটিং করছেন। মনে হচ্ছিল ব্যাটিং সহায়ক এক উইকেটেই সতর্কতার সাথে ব্যাটিং করে যাচ্ছেন। তবে শেষের দিকে গিয়ে ওয়ার্নারের স্ট্যাম্পিং যদি হয়েই যেত তাহলে ম্যাচের আবহ অন্য রকম হয়ে যেতে পারত।
৭৩ রানে ওই সুযোগ হাতছাড়া করেন মুশফিক। যদিও বল অনেক নিচু ছিল। এক অর্থে টাফ সুযোগ। তবু! তবে এরপর থেকে শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাটিংটাই করে গেছেন ওয়ার্নার ও হ্যান্ডসকম্ব।
প্রথম দিন কেমন ছিল : সাব্বির রহমান ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের করে রাখতে সক্ষম হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সাব্বিরে ৬৬ ও মুশফিকুরের অপরাজিত ৬২ রানের সুবাদে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেটে ২৫৩ রান করেছে টাইগাররা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচেও টস জিতে এবার প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নিতে কার্পণ্য করেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার সিদ্বান্তে ব্যাট হাতে নেমে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিমায় শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। প্রথম ৯ ওভারে মাত্র ১৩ রান যোগ করেন তারা। তবে দশম ওভারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তামিম ও সৌম্য। অস্ট্রেলিয়ার অফ-স্পিনার নাথান লিঁও’র বলে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন তামিম। ৩৪ বল মোকাবেলা করে ৯ রান করেন তামিম।
তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে এবারও ব্যর্থ ইমরুল কায়েস। ১১ বলে ৪ রান করে লিঁও’র ডেলিভারিতে লেগ বিফোর হন ইমরুল। ২১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে খেলার ফেরানোর চেষ্টা করেন সৌম্য ও মোমিনুল। অনেকটা সর্তক অবস্থাতেই শুরু করেন তারা। তবে খুব বেশিক্ষণ নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি সৌম্য।
লিঁও’র উপর কিছুটা চড়াও হন সৌম্য। ইনিংসের ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর পর শেষ ডেলিভারিতে উইকেট ছেড়ে লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান সৌম্য। এতে সাহস ফিরে পান সৌম্য ও মোমিনুল। তাই রান তোলার কাজটা বুঝে-শোনেই করছিলেন সৌম্য ও মোমিনুল।
কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির আগ মুহূর্তে লিঁওর ডেলিভারিতে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন সৌম্য। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮১ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রান করেন সৌম্য। তার বিদায়ে ৩ উইকেটে ৭০ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। সৌমের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৪৯ রান যোগ করেন মোমিনুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রান।
বিরতিতে থেকে ফেরার পর উইকেট পতনের তালিকায় নাম তোলেন মোমিনুলও। লিঁও’র চতুর্থ শিকার হবার আগে ২টি চারে ৬৭ বলে ৩১ রান করেন মোমিনুল। লেগ-বিফোর ফাঁেদ তামিম-সৌম্য-ইমরুল-মোমিনুলকে শিকার করেন লিঁও। ফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একই বোলারের কাছে উপরের সারির প্রথম চার ব্যাটসম্যানের এলবিডব্লু হয়ে আউট হওয়া নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা।
৮৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত করার দায়িত্ব পান ঢাকা টেস্টের নায়ক সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৩টি বাউন্ডারিতে ভালো কিছু করার ইঙ্গিতও দেন সাকিব। কিন্তু সাকিবের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাস্টন আগার। সাকিবকে ২৪ রানের বেশি করতে দেননি আগার।
১১৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর চা-বিরতি আগ পর্যন্ত সর্তকতার সাথেই খেলতে থাকেন মুশফিকুর ও সাব্বির রহমান। এমন অবস্থায় ৫ উইকেটে ১৫৫ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এসময় অধিনায়ক মুশিফক ২৯ ও সাব্বির রহমান ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
চা-পানের ছোট্ট বিরতি শেষেও নিজেদের মতো করে খেলেছেন মুশফিক ও সাব্বির। অস্ট্রেলিয়া বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে দলের স্কোর ২শ’ রানে নিয়ে যান এ জুটি। এরপর টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সাব্বির।
হাফ-সেঞ্চুরির পরও দমে যাননি সাব্বির। নিজের ইনিংসটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজ ভুলেই ব্যক্তিগত ৬৬ রানে স্টাম্পিং হয়ে থেমে যান সাব্বির। লিঁওর পঞ্চম শিকার হবার আগে ১১৩ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান সাব্বির। মুশফিকের সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১০৫ রান যোগ করেন সাব্বির। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান।
৮২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাব্বির আউট হবার দিনের বাকী সময়টুকু আর কোন বিপদ হতে দেননি মুশফিক ও নাসির হোসেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে দিন শেষে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন মুশি। তার ১৪৯ বলের ইনিংসে ৫টি চারের মার ছিলো। ৩টি বাউন্ডারিতে ৩৩ বল মোকাবেলা করে ১৯ রানে অপরাজিত নাসির।
অস্ট্রেলিয়ার লিঁও ৭৭ রানে ৫ উইকেট নেন। ৬৯ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১তমবারের মত ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ বা ততোধিক উইকেট নিলেন লিঁও। এছাড়া আগার ৪৬ রানে ১ উইকেট নেন।