সুনামগঞ্জ -১ নির্বাচনী এলাকা ॥ বিএনপির ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে, তৃণমূলের প্রত্যাশা নতুন মুখ

46

বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর থেকে :
তৃণমূলের প্রত্যাশা নতুন মুখ, নেতারা বিভাজন নতুন -পুরনোতে, সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে। একাদাশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ -১ নির্বাচনী এলাকা তাহিরপুর, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলায় বিএনপির একাধিক নতুন-পুরনো মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা মাঠে। সরজমিন সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকায় মাঠে দেখা গেছে দু’জন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে। অন্য ৪ জন পোস্টার, বিলবোর্ড, ফেইসবুক পেইজে মনোয়ন প্রত্যাশা ব্যাক্ত করে কাজ করছেন। সেই সাথে তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়নের দৌড়ে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে সর্বস্তরের নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ডাক্তার রফিক চৌধুরী, ওয়ান ইলিভেনের সংস্কারপন্থী নেতা বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য নজির হোসেন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক ও যুক্তরাজ্য প্রাবাসী ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দি লিটন।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে ও সরজমিন দেখা গেছে যারা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে সুনামগঞ্জ -১ নির্বাচনী এলাকা (জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, ধর্মপাশা ও তাহিরপুর) সরজমিন মাঠ পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও গণ সংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন কামরুজ্জামান কামরুল ও নজির হোসেন। তাছাড়া ফেইসবুক, বিলবোর্ড ও পোস্টারে প্রচারণা চালিয়ে মোবাইল ফোনে নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করছেন, ডাক্তার রফিক চৌধুরী, আনিসুল হক, আব্দুল মোতালেব ও ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দি লিটন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা  বিভিন্ন সূত্রে মনোনয়ন লাভে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ও নির্বাচনী এলাকায়  গ্রাম থেকে গ্রামে বিএনপির কর্মী সমর্থক ও ইউনিয়ন, উপজেলা পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করছেন। যোগাযোগের ফলে সাধারণ কর্মী সমর্থকরা যেমন উজ্জিবীত হচ্ছেন সেই সাথে আগামী নির্বাচনে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন মনে মনে।
গ্রাম থেকে গ্রামে ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রত্যাশা করছেন নতুন মুখের। অপরদিকে নির্বাচনী এলাকায় দলীয় পদদারীরা এখনই মুখ খুলতে নারাজ। উপজেলা পর্যায়ে দু’একজন নেতা একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে সরাসরি থাকলেও বেশীরভাগ নেতাকর্মী এই মুহূর্তে নিজেদের একটু আড়াল করেই রাখছেন। সরাসরি কারো পক্ষে মাঠে কাজ করছেন না, সবাইকে সাথে আছি বলে চালিয়ে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে তারা দেখছেন পছন্দের নেতা মনোনয়ন না পেয়ে অন্যজন পেলে সম্পর্ক ও দলীয় অবস্থানের অবনতি।
জামালগঞ্জ উপজেলার ভিমখালী ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী বিএনপি একনিষ্ঠ সমর্থক তোফায়েল আহমেদ জানান, পুরনো নেতারা দলের দুঃসময়ে দল ছেড়ে চলে গেছেন, আন্দোলন সংগ্রামে তারা মাঠে  ছিলেন না। সে ক্ষেত্রে এ আসনে দল নতুন কাউকে মনোনয়ন দিলে দলের জন্য ভাল হবে। বিশেষ করে বিএনপিকে পুনরুজ্জীবিত করতে নতুন মূখের মধ্যে যারা মাঠে কাজ করছেন।
মধ্যনগর থানার বংশিকুন্ডা ইনিয়নরে ছাত্রদল নেতা হাবিবুর রহমান তিনি বলেন, দলের দুর্দিনে যারা দলকে ফেলে চলে যায় তারা আবার যে যাবেনা তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে।
জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সারোয়ার বলেন, সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকায় অযোগ্য ও জনগণসম্পৃক্ততা নাই এমন লোকদের মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে দলের ভড়াডুবি হবে। দুঃসময় থেকে যারা দলকে সুসংগঠিত করতে এখনো মাঠে কাজ করছেন তাদের কে মনোয়ন দেয়া উচিৎ।
তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন,মনোনয়নের চেয়ে এই মুহূর্তে বেশী প্রয়োজন সাংগঠনিক কর্মক্ষমতা বাড়ানো, দলের জন্য নিবেদিত ও যোগ্য নেতা মনোয়ন পেলে দল আরো ভেগবান হবে, নেতাকর্মীদের মধ্যেও বিভাজন থাকবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার জেলা বিএনপি জনৈক এক নেতা জানান, নির্বাচনের এখনো বাকী বছর দেড় এক। কে মনোনয়ন পায় সহসা বলা মুশকিল। এই মুহূর্তে কারো সাথে গিয়ে নিজের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই না।
ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আমজাদ বলেন, নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয় হলেও নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জ-১ জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, তাহিরপুর ও ধর্মপাশাতে পরিচয় রয়েছে ডাক্তার রফিক চৌধুরী ও নজির হোসেনের। তারপও দল যাকে মনোনয়ন দেয় আমরা তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো।