দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভায় জেলা প্রশাসক ॥ বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান

35

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাহাত আনোয়ার। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন আয়োজিত জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি আয়োজিত জরুরি সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাহাত আনোয়ার বলেন, সবাই মিলে চেষ্টা করলে দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব। তাই সরকারের পাশাপাশি বিত্তশালী ও প্রবাসীদের এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। সভায় জেলা প্রশাসক জানান, বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোতে এরই মধ্যে ১৩৭ মেট্রিক টন চাল ও দুই লাখ ৭৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে বন্যা কবলিত অনেক এলাকা নিজেও পরিদর্শন করেছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের উপজেলা ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি ক্ষেত্রে ভূমিকা নেওয়ার ব্যাপারে তাগিদ দেন।
সভায় সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হলেও আমাদের মানবিক দায়বদ্ধতা আছে। সেই তাগিদ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। বন্যা কবলিত এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় থানাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছেন। পাশাপাশি যেকোনো প্রয়োজনে তাকে ফোন দেওয়ার জন্য বা উপজেলা পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ব্যাতিরেকেও যেকোনো কাজে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা স্ব-স্ব এলাকার বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা-কুশিয়ারা খননে মেঘা প্রকল্প হাতে নেওয়া দারকার বলে মত দেন সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া সিলেটের বিয়ানীবাজারে সুরমার ডাইক আগে থেকেই ভাঙা ছিল। পাউবো কর্মকর্তাদের একাধিকবার বলার পরও বিষয়টি তারা আমলে নেননি, এমন অভিযোগ করেন বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। সিলেটে বন্যার কারণে ১৬১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে জানান জেলা শিক্ষা অফিসার নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৪৫টিতে পানি ঢুকে পড়েছে। বাকি বিদ্যালয়গুলোর আশ-পাশে বন্যার পানি। শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সবচেয়ে প্রশংসা কুঁড়িয়েছে দমকল বাহিনী। সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকায় গাড়ির ব্যবহার ব্যতিত নৌকাযোগে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন তারা।
সভায় আবহাওয়া অধিদফতর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সাধারণত এ মৌসুমে ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা, সেখানে ১ হাজার ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে জুনে। আগামী এক সপ্তাহ আরো বৃষ্টিপাত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।